খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের খ্যতিমান জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর আমাদের মাঝে আর নেই।
গানের ভূবনে-
হায়রে মানুষ, রঙ্গীন ফানুস
দম ফুরাইলেই ঠুস
তবুতো ভাই কারোরই নাই একটুখানি হুশ
হায়রে মানুষ, রঙ্গীন ফানুস
রঙ্গীন ফানুস, হায়রে মানুষ।।
তিনি আরো গেয়েছেন-
” জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প”, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, আমার বুকের মধ্যে খানে, আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান, ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা, সবাই তো ভালোবাসা চায় প্রভৃতি
এই গানের মাধ্যমে কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
অসংখ্য ভক্তদের কাঁদিয়ে গত ০৬-০৭-২০২০ খ্রী:রোজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা৫৫ মিনিটে রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় তার বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তখন তার বয়স হয়েছিলো ৬৪ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে ভূগছিলেন।
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে ৯ মাস পর গত ১১ই জুন রাত ২টা ৩০ মিনিটে দেশে ফিরেন।
জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পীর জন্ম ৪ নভেম্বর ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের রাজশাহী জেলায়। সেখানেই তিনি বেড়ে উঠেছেন । পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের বহু চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ১৯৭৭ সালে ‘মেইল ট্রেন’সিনেমার মধ্য দিয়ে প্লেব্যাকে যাত্রা শুরু করেন এন্ড্রু কিশোর।
যেজন্য তিনি ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ নামে পরিচিত। দীর্ঘদিন পেশাদার কণ্ঠশিল্পী হিসেবে দুই বাংলায় গান করেছেন এন্ড্রু কিশোর।
তিনি মোট আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন ৫ বার। এছাড়াও মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সাল ও নির্বাচিত গান:
১৯৮২: বড় ভাল লোক ছিল
১৯৮৭: সারেন্ডার
১৯৮৯: ক্ষতিপূরণ
১৯৯১: পদ্মা মেঘনা যমুনা
১৯৯৬: কবুল
২০০০: আজ গায়ে হলুদ
২০০৭: সাজঘর বিজয়ী
২০০৮: কি যাদু করিলা
সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়কের পুরস্কার পান তিনি।
বাচসাস পুরস্কারের সাল ও নির্বাচন গান:
১৯৮৭: স্বামী স্ত্রী
২০০১: প্রেমের তাজমহল
২০০৮: মনে প্রাণে আছ তুমি
২০১০: গোলাপী এখন বিলাতে
এছাড়াও ১৯৯৮ সালে পদ্ম পাতার পানি’ গানটির জন্য মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পান তিনি।
শোক প্রকাশ:
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খ্রিস্টান সমাজের এই খ্যতিমান কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী এক শোকবার্তায় বলেন, এন্ড্রু কিশোর তার গানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন চিরকাল।
এন্ড্রু কিশোরের আত্মার শান্তি কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ।
আরো শোক প্রকাশ করেছেন খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের –
ব্রাহ্মণবারিয়া ব্যাপ্টিষ্ট চার্চের পালক এবং বি এম কমিটির চেয়ারম্যান Titas Das Gupta (joy),চাঁদপুর ব্যাপ্টিষ্ট চার্চের পালক Charles Anup Das(Babu),CDBCFএর সম্পাদক মি.পিনাক বাইন,CDBCFএর কোষাধ্যক্ষ মি.মিন্টু দাস।
তার রেখে যাওয়া পরিবারের সবার জন্য প্রার্থনা চেয়েছেন।
এন্ড্রু কিশোরের ছেলে ও মেয়ে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছেন। তারা সেখান থেকে দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন। ছেলে-মেয়ে দেশে ফিরলেই কিংবদন্তী এই সংগীতশিল্পীর শেষকৃত্যের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পীর পরিবারের পক্ষ থেকে। আপাতত তার মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে।
এই গুনী শিল্পীর মৃত্যুতে আমরা ওয়ার্ল্ড খবর২৪ পরিবার এবং আমি ব্যক্তি গত ভাবে গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।শিল্পীর আত্মার শান্তি কামনা করছি।
ডা.লরেন্স তীমু বৈরাগী
সম্পাদক
ওয়ার্ল্ড খবর২৪
01922-814090
E-mail-lorencetimo@gmail.com
www.worldkhobor24.com.