করোনার কারণে কেড়ে নিবে ঈদের কোলাকুলি ও হ্যান্ড সেকের আনন্দ।কিন্তু মনের আনন্দ তো কেড়ে নিতে পারবে না এই করোনায় ?
করোনা ভাইরাসের মধ্য দিয়ে এবারের ঈদ যে ভাবে কাটানো হবে!
এ বছরের ঈদ।
সাওম আরবি শব্দ। এর সমার্থক শব্দ রোজা। রোজা ফারসি থেকে আগত। সাওম শব্দের আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে সাওম বা রোজা অন্যতম
ইসলামের পঞ্চ-স্তম্ভের অন্যতম একটি হলো রোজা। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন।
রোজা শুধু আমাদের ওপর ফরজ করেছেন তা কিন্তু নয় বরং আমাদের পূর্ববর্তী সবার ওপরই রোজার বিধান ছিল।
এ রোজা সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা খোদাভীরু হতে পার। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৩)।
রোজার শর্ত :
★ নিয়ত করা
★ সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকা
★ যৌন আচরণ থেকে বিরত থাকা।
রোজা রাখার ৪ শর্ত :
★ মুসলিম হওয়া।
★ অক্ষম না হওয়া।
★ ঋতুস্রাব থেকে বিরত থাকা নারী।
তথ্য সূত্র : ইসলামিক ফাউন্ডেশন, দশম সংস্করণ :।
ত্রিশটি দিন রোজা রাখার পর, যখন ঈদ আসে তখন সবার মনে আসে আনন্দের আত্তহারা ।সেই আনন্দের আত্তহারায় কবি লিখেছেন তার গান –
” ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ”
১৯৩১ সালে কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ও সুরারোপিত গান।
আজ করোনার কারনে কবির এই গানের আনন্দ ঘরে বসেই করতে হবে,কারণ-
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ৩০শে মে পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়ে ঈদের আগে সারাদেশে যাত্রীবাহী সব পরিবহন চলাচলের ওপর কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করেছেন
ঈদের দিনে কারো বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া হবে না,পারবে না যেতে নিজের গ্রামে ঈদ করতে।
যেহেতু করোনা ভাইরাস একে অপরের স্পর্শে ছড়ায় তাই, সরকার ঈদের আগে এবং পরে সাত দিন সারাদেশে সড়ক এবং নৌপথে যাত্রীবাহী সব ধরণের যানবাহন চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা করছেন।
এমনকি ঈদের সময় ব্যক্তিগত যানবাহনও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়েছে।
যারা যে শহরে বা জেলায় আছেন, তারা ঈদের সময় অন্য জেলায় বা গ্রামের বাড়িতে যেতে পারবেন না। সেটাই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
করোনার আক্রান্তের কারণে এবং নিয়ম পালনের জন্য সবাই কষ্টে জীবন যাপন করায় ঈদের আনন্দ কমে যাচ্ছে।
এবারের ঈদ হয়তো আগের ঈদগুলোর মতো তত জমজমাট আনন্দের হবেনা কিন্তু আমরা আমাদের মতো করে পরিবারের সাথে সুন্দর সময় কাটানোর সুযোগ পাব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে আত্নীয়স্বজনের সাথে আমরা আমাদের এবারের ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারবো। কিছু সীমাবদ্ধতার মাঝেই আনন্দ মুখোর হয়ে উঠুক করোনা কালের ঈদ আনন্দ।
কারণ আমরা আজ বন্দীত্বের জীবন যাপন করছি।আমাদের কারো কাছেই এই বন্দীত্ব জীবন সুখকর নয়, হোক সে মানুষ কিংবা পশুপাখি।
ছোট্ট এ জীবনে কেউই চায় না বন্দিত্বের স্বাদ নিতে। তবুও মাঝে মধ্যেই আমরা বন্দি হয়ে পড়ি,কখনো বা নিজেরাই নিজেদেরকে সাময়িক সময়ের জন্য বন্দি করে রাখি।
এমনই একটি বন্দিদশা চলছে বর্তমানে পৃথিবী জুড়ে।বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে আজ অবরুদ্ধ পুরো পৃথিবী। চারদিকে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। কিন্তু সামনে আসছে বহু আকাঙ্ক্ষিত পবিত্র ঈদ।
এই ঈদে সব মানুষেরই কোন না কোন পরিকল্পনা আছে কিভাবে কাটনো হবে ঈদের দিন,এবং ঈদের পূর্বে শপিং করা,বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ঈদের দিন সিনেমায় যাওয়া। সব স্বপ্নই ভেঙে গেলো পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারীর করোনা ভাইরাসের কারণে।
তাই মন খারাপ প্রত্যকটি মানুষেরই।
এবারে শপিং বন্ধ।
ডা.লরেন্স তীমু বৈরাগী
সম্পাদক