আয়েশা সিদ্দিকা
তাং-০৬-১০-২০২০খ্রী:রোজ:মঙ্গলবার।
ধর্ষন নিয়ে কিছু কথা অনেকদিন ধরে লিখবো লিখবো ভাবছিলাম। কিন্তু লেখা হয়ে ওঠে না। অবশেষে আজ লিখলাম।
আজকাল ধর্ষন যেনো একটা আর্ট হিসাবে রূপ নিচ্ছে। ধর্ষকরা এটাকে সৌখিন করে তুলছে। কে কত সৌখিন ভাবে ধর্ষন করতে পারবে। তাইতো প্রতিটা ধর্ষনের পিছনে এক একটা সৌখিনতা দেখা যাচ্ছে। এ লজ্জা রাখি কোথায়? ধিক্কার জানাই এমন কুলাঙ্গারদের। সকলের উচিত এই নোংরা মানসিকতার লোকদের ঘৃণা করা।
পুরুষ বা ছেলেরা বলে থাকে নারী হলো কারোর মা, কারোর বোন,কারোর স্ত্রী,কারোর মেয়ে। অথচ দিনশেষে তারাই ভুলে যায় এসব কথা। আর ধর্ষনে লিপ্ত হয়। ভুলে যায় আজ সে অন্যর মেয়েকে বা বোনকে ধর্ষন করছে, ভুলে যায় তারও বোন বা মেয়ে থাকতে পারে অন্যদের কাছেও তার মেয়ে বা বোন ধর্ষন হতে পারে। তখন সে পশু হয়ে যায়। তার ভেতরে পশুত্ব বোধ কাজ করে। ইদানীং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা খবরের পাতা ঘাঁটলেই দেখা যায় এই জায়গায় ধর্ষন হয়েছে,গতকাল ওই জায়গায় ধর্ষন হয়েছে। এভাবে দেখা যায় প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ ধর্ষন হয়েই থাকে কিছু পশুর মাধ্যমে। খবরের পাতায় বড় বড় করে লেখা থাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বাড়ি যেতে রাস্তায় ধর্ষন হয়েছে, প্রতিবেশীর কাছে গৃহবধূ ধর্ষন হয়েছে, ছোট্ট বাচ্চাও ধর্ষন হচ্ছে কারোর না কারোর কাছে। পাঁচ সাত বছরের একটা নিষ্পাপ বাচ্চা মেয়ের মধ্যে কি খুঁজে পায় যে বাচ্চাটাও জানোয়ারদের হাত থেকে রেহাই পায় না। এসব করার আগে তোমাদের কি বিবেকে একটুও বাঁধা পায় না? কেমন নিচু মানসিকতার পরিচয় তুমি দাও?
ধর্ষন করেই মেয়েরা ছাড়া পেয়ে যায় না,, ধর্ষন করার পর তাদের মেরেও ফেলে। কতটা বর্বরতা হলে এমন কাজটাও করতে পারে। ধর্ষন করার পর আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা, ধর্ষন করার পর জিহবা কেটে ফেলা, ধর্ষন করার পর গলা টিপে বা ছুরিকাঘাত করে মেরে ফেলা,ধর্ষন করার পর মেরে কাপড় মুড়িয়ে জলে ভাসিয়ে দেওয়া ইত্যাদি অনেক ঘটনা আছে। সত্যি কথা বলতে মেয়েরা একদম নিরাপদে নেই। আজকাল মেয়েরা রাস্তাঘাটে বের হলেও একটা আতঙ্ক বিরাজ করে তাদের মনে। কে বলতে পারে হয়তো এরপরের ধর্ষনের স্বীকার আমিই হতে পারি! কারন রাস্তাঘাটে আজকাল হায়েনাদের দল ঘাপটি মেরে বসে থাকে কখন একটা মেয়ে পাবে আর তাদের পশুর রূপ দেখাবে।
আমাদের দেশ ধর্ষনমুক্ত হবে কীভাবে? যে দেশে ধর্ষকের পক্ষে আইনজীবী পাওয়া যায়। এই যুগে তো টাকা থাকলে সাত খুন মাফ হয়ে যায়। ধর্ষিতার সঠিক বিচার পাওয়া যায় না। এভাবে কত শত শত সত্য ঘটনা টাকার নিচে চাপা পরে যায়। যতদিন না আইনকানুন নিরপেক্ষ হচ্ছে,, ততদিন অন্যায়, অত্যাচার,জুলুম, ধর্ষনসহ আরো অনেক অপরাধ বেড়েই যাবে। সম্প্রতি একটা নজরকাড়া ঘটনা ঘটেছে, এর জন্য আমি অনেক খুশি হয়েছি। সিলেটে এক মেয়ে তার হাসবেন্ড সহ একটা কলেজের আশেপাশে বা পার্কে ঘুরতে যায়। সেখানে হোস্টেলে থাকা কয়েকটা কুলাঙ্গার ওর স্বামীকে বেঁধে রেখে মেয়েটিকে ঘনধর্ষন করে। তারপর এই প্রথম দেখলাম ধর্ষকের পক্ষে কোন আইনজীবী দাঁড়ায় নি। ধন্যবাদ আইনজীবী বার। এভাবেই প্রতিটি আইনজীবী সমিতি ধর্ষকের পাশে না দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। অথবা এদের কোন আইনি শাস্তি দেওয়া ছাড়া ধর্ষককে ক্রশ ফায়ার করে মেরে ফেলা উচিত। তবেই সবজায়গায় ধর্ষনের হার কমে যাবে। এভাবে প্রতিটি মেয়ে আতঙ্ক মুক্ত হয়ে সমাজে চলতে পারবে।
আজ সমস্ত জাতীকে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে নারী সম্পার্কের
আমরা সবাই বুঝি নারীরা হলো আমাদের সমস্ত সৃর্ষ্টির মূল।
তাই নারীর সন্মান রক্ষা করাও আমাদের কর্তব্য।
তাই আসুন আমরা আমাদের ভিতরের লূকিয়ে থাকা লালসাটাকে পরিত্যাগ করে, সুন্দর একটি সমাজ সৃর্ষ্টি করি,যেখানে নারীরা থাকবে নিরাপদে।