উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন নায়ক ফারুক।
উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) সিঙ্গাপুরে পাড়ি দিবেন ঢালিউডের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফারুক। এমন তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন অভিনেতা নিজেই।
‘মিয়া ভাই’ খ্যাত নায়ক ফারুক জানান, উন্নত চিকিৎসা নিতে সিঙ্গাপুর যাচ্ছি। ইতোমধ্যে সেখানে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল রোববার সকাল সাড়ে সাতটার কার্গো বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশটির উদ্দেশ্যে রওনা দিব। পাশাপাশি নিজের সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন গুণী এই চিত্রতারকা।
জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল ফারুকের চিকিৎসা হবে। সেখানে নায়কের সঙ্গে যাবেন তার স্ত্রী ফারহানা ফারুক।
দীর্ঘ ১ মাস যাবৎ জ্বরে ভুগছেন নায়ক ফারুক। গেল ১৮ আগস্ট শরীরে জ্বর নিয়ে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। সেখানে ভর্তি হওয়ার পর তার করোনা টেস্ট করা হলে, সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। পরে খানিকটা সুস্থ হয়ে ২৬ আগস্ট বাড়ি ফেরেন।
এর সপ্তাহ খানেকের মাঝে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন ফারুক। তারপর ৩১ আগস্ট একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে তাকে। তবে শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়ায় ৫ সেপ্টেম্বর এভারকেয়ার (অ্যাপোলো) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। সেখানেও শরীরের একাধিক টেস্ট করা হলে কোনোকিছু ধরা পড়েনি। কিন্তু শরীরে জ্বরের মাত্রাটা কিছুতেই কমছিলো না ফারুকের। এতে দুশ্চিন্তায় পরে যান দায়িত্বরত চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যরা।
অভিনেতার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) চিকিৎসকরা একটি বোর্ড মিটিং করেন। সেখানে সব রিপোর্ট পর্যালোচনা করে চিকিৎসরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, ফারুক টিভি রোগে ভুগছেন। যদিও বিষয়টি সম্পর্কে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।
নায়ক ফারুক এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
————————-
নায়ক ফারুক ১৮ আগস্ট ১৯৪৮ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা আজগার হোসেন পাঠান।
তার শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায়। বর্তমানে বসবাস করছেন উত্তরাতে নিজ বাড়িতে। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
নায়ক ফারুক কবর হোসেন পাঠান দুলু,যাকে এখন আমরা নায়ক ফারুক নামে অধিক পরিচিত,তিনি একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ।
১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত জলছবি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। তিনি লাঠিয়াল, সুজন সখী, নয়নমনি, সারেং বৌ, গোলাপী এখন ট্রেনে, সাহেব, আলোর মিছিল, দিন যায় কথা থাকে, মিয়া ভাই-সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন এবং ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি সবচেয়ে সফল ও সেরা নায়কদের একজন হিসেবে স্বীকৃত।
রাজনীতি:
——–
অভিনয়ের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন নায়ক।
নায়ক ফারুক স্কুল জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
১৯৬৬ সালে তিনি ছয় দফা আন্দোলনে যোগ দেন এবং এ সময়ে তার নামে প্রায় ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
ফারুক ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিতব্য একাদশ বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
বর্তমানে ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
ব্যক্তিগত জীবন:
————-
নায়ক ফারুক ফারজানা পাঠানকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। কন্যা ফারিহা তাবাসসুম পাঠান ও পুত্র রওশন হোসেন।
আজ তিনি অসুস্থ,তাই তার পরিবার থেকে তার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
লিমা
ওয়ার্ল্ড খবর২৪