সম্পাদকীয় প্রতিবেদন-
জীবনে দুঃখ–কষ্ট, বেদনা–ব্যর্থতা আসবেই। পাশাপাশি আসবে আনন্দ–সুখ–সফলতা। মানুষের জীবনে আনন্দ–বেদনার এই কাব্যে আনন্দ থাকুক এগিয়ে। কষ্টকে হারিয়ে দিক আনন্দ। সফলতা ঢেকে দিক ব্যর্থতাকে।
আমাদের প্রত্যকের জীবনেই ভালো–মন্দ দুটোই আছে। উত্থান ও পতন আছে।আছে সফলতা-ব্যর্থতা।
তবু জীবন কি থেমে আছে আমাদের?
না থেমে নাই।
বর্তমান সময়ে তো আরো খারাপ ভাবে অতিবাহিত হচ্ছে।এক দিকে মহামারি করোনার ভয়াল থাবায় তছনছ করে দিয়েছে বিশ্বকে।
অন্য দিকে এই করোনার কালে অর্থনীতিতে এসেছে ধ্বস।
চারিদিকে শুধু সমস্যা আর সমস্যা।
মাঝেমাঝে মনে হয়,এই তো বুঝি ধ্বংষ হয়ে যাচ্ছে পৃথিবী।ধ্বংষ হয়ে যাচ্ছে সুন্দর আমাদের এই জীবন।
কিন্তু শেষ না হয়ে বরং বারবার কোন না কোনো বড় রকম বড় বড় দুর্যোগ, মহামারী সহ নানা বিপদ-আপদ চলে আসছে আমাদের ব্যক্তি জীবনে,সামাজিক জীবনে এবং জাতীয় জীবনে।
ঠিক এই বড় রকমের দুর্যোগমুহুতে আমরা প্রত্যেকেই ভাবি যদি আমাদের জীবনে কোন ‘মিরাকেল’–এর মতো এমন ঘটনা ঘটতো যে, সকল সমস্যা দূর হয়ে যেতো?
দূর হয়ে যেতো করোনার মো মহামারী,দূর হয়ে যেতো সকল প্রকার মহাদূর্যোগ।
কিন্তু এই সকল ভাবনার আগে আমাদের প্রয়োজন ভাবা প্রয়োজন নিজেদের মনের পরিবর্তন ও সংশোধন।
প্রয়োজন সময় উপযোগী সঠিক চিন্তা ও চেতনার।
না হয় জানিনা কখন কোন ভয়াল বিপদ আমাদের জীবনে এসে আঘাত করে তছনছ করে দিয়ে যাবে আমাদের পরিবার,সমাজ ও দেশকে।
যার বর্তমান অবস্থা আমরা দেখতে পাচ্ছি করোনার আক্রমণে।সারা বিশ্ব স্তমবিত হয়ে আছে।হয়ে আছে আজানা মৃত্যর ভয়।কখন কার মধ্যে ঢুকে পরে এই প্রাণঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাস।
যে ভাইরাস কেড়ে নিল পৃথিবীর বুক থেকে লক্ষ লক্ষ প্রাণ।
আর লক্ষ লক্ষ প্রাণের মধ্যে যে পরিবারটি হারিয়েছে তার একমাত্র উপার্জন করার মানুষটিকে,যে হারিয়েছে তার প্রিয়তমাকে, হারিয়েছে তার পিতা, মাতা সহ আত্মিয় সজনকে,তারাই বুঝতে পারছে সেই বিয়োগ ব্যথা।
বুঝতে পারছে পরিবারের অভাব অনাটন।
তাই এই দূর্যোগ মুহূর্তে আমাদের প্রত্যকের একটু সর্তকতাই দিতে পারে আমাদেরকে রক্ষা।
এত সব কিছুর পরও যখন আস্তে আস্তে করে খুলে দিচ্ছে লক ডাউন, খুলে দিচ্ছে মার্কেট সহ সকল বিনোদনেরর জায়গাগুলো – তখনই মনে পড়ে গেল আমাদের বিশ্ব কবিরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আনন্দ-বেদনা, উত্থান-পতনের সব অনুভূতির কথা।
তিনি বলেছিলেন-
আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে।
তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে।।
তবু প্রাণ নিত্যধারা, হাসে সূর্য চন্দ্র তারা,
বসন্ত নিকুঞ্জে আসে বিচিত্র রাগে।।
তরঙ্গ মিলায়ে যায় তরঙ্গ উঠে,
কুসুম ঝরিয়া পড়ে কুসুম ফুটে।
নাহি ক্ষয়, নাহি শেষ, নাহি নাহি দৈন্যলেশ—
সেই পূর্ণতার পায়ে মন স্থান মাগে।।
যখন চারিদিকে বিনোদন কেন্দ্র গুলোর দিকে তাকাই তা হলে মনে পরে যায় কবির সেই রবীন্দ্রসংগীতটি—
ওরে, নূতন যুগের ভোরে
দিস নে সময় কাটিয়ে বৃথা সময় বিচার করে।।
কী রবে আর কী রবে না, কী হবে আর কী হবে না
ওরে হিসাবি,
এ সংশয়ের মাঝে কি তোর ভাবনা মিশাবি?।…
তাই আজ এই ভয়াল মহামারী করোনা কালে আমাদের প্রত্যকের কর্মক্ষেত্রই বলুন, পরিবার বলুন, কিংবা বন্ধুত্ব—আনন্দ–বেদনা বলুন, যখন ব্যর্থতা যেন সফলতার কাছে হয় পরাজিত এই প্রত্যাশা হউক প্রত্যেকের জীবনে।
ঘরে থাকুন,অপ্রয়োজনে বের না হউন,
নিজে বাঁচুন, অন্যকে বাঁচতে সহায়তা করুন।
যে কোন মাক্স নয়, তিন স্তরের মাক্স ব্যবহার করুন।